From the physical to spiritual aspects
Christopher Nolan-এর 'Oppenheimer' চলচ্চিত্রের মুক্তির সাথে সাথে এতে কোনও সন্দেহ নেই যে "পারমাণবিক বোমার জনক" সম্পর্কে জানার জন্য মানুষের মনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। J. Robert Oppenheimer দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য পরিচিত ছিলেন। এই তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন ম্যানহাটন প্রকল্পের গোপন লস অ্যালামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির পরিচালক, যা পারমাণবিক বোমা তৈরি করেছিল যা জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে আনুমানিক ১০০,০০০ থেকে ২০০,০০০ লোককে হত্যা করেছিল।
Oppenheimer সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী? তাহলে এই কুখ্যাত পদার্থবিদ সম্পর্কে আপনি যা জানেন না তা জানার জন্য ক্লিক করুন।
J. Robert Oppenheimer ১৯০৪ সালের ২২শে এপ্রিল নিউ ইয়র্ক সিটিতে Julius Robert Oppenheimer নামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি Julius এবং Ella Oppenheimer-এর পুত্র ছিলেন, এবং তাঁরা উভয়ই জার্মান বংশোদ্ভূত ধর্মনিরপেক্ষ আশকেনাজি ইহুদি ছিলেন। Oppenheimer-কে এখানে তাঁর ভাই Frank-এর সাথে দেখা যাচ্ছে (ছবির বাঁদিকে)।
এখানে ছবিতে তিনি এবং তাঁর বাবা একসাথে আছেন, Oppenheimer-রা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল আমদানি করে তাঁদের সম্পদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন।
Oppenheimer-এর মা (ছবিতে যিনি তাঁকে কোলে নিয়েছেন) একজন শিল্পী ছিলেন। তাঁর পরিবারের শিল্প সংগ্রহের মধ্যে Pablo Picasso এবং Édouard Vuillard-এর কাজ এবং Vincent van Gogh-এর কমপক্ষে তিনটি মৌলিক চিত্রকর্ম অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরের অধ্যয়নের সময় Oppenheimer ল্যাটিন, গ্রীক, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি কবিতা প্রকাশ করেছিলেন এবং প্রাচ্য দর্শন অধ্যয়ন করেছিলেন।
Oppenheimer হিন্দু ধর্মগ্রন্থের পবিত্র ভাষা সংস্কৃতের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। বার্কলেতে অধ্যাপনার সময় তিনি এই ভাষা অধ্যয়ন করেছিলেন এবং সংস্কৃতে ভগবদগীতা পাঠ করেছিলেন। Oppenheimer ছটি ভাষায় কথা বলতে পারতেন।
Oppenheimer ১৯২৫ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯২৭ সালে জার্মানির গোটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি অর্জন করেন। ছবিতে তাঁকে ১৯২৬ সালে নেদারল্যান্ডসের লিডেনে মাঝখানের সারিতে, বাঁদিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে দেখা যাচ্ছে।
বলা বাহুল্য, Oppenheimer তাঁর যৌবনকাল থেকেই একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি এক বছরের মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পড়া শেষ করেছিলেন এবং অষ্টম শ্রেণীতে অর্ধেক বছর বাদ দিয়েছিলেন।
জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হওয়ার পরে, Oppenheimer তাত্ত্বিক মহাজাগতিক বস্তুর উপর গবেষণাপত্র প্রকাশ শুরু করেছিলেন। ১৯৩৯ সালে তিনি একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন যেখানে তিনি কৃষ্ণ গহ্বর হিসাবে আমরা যেটিকে বর্তমানে জানি তার অস্তিত্বের ধারণা দিয়েছিলেন।
Oppenheimer জীববিজ্ঞানী Katherine "Kitty" Puening (ছবিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে)-এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, যাঁর থেকে তাঁর দুটি সন্তান ছিল, যাদের নাম ছিল Peter এবং Katherine। তাদের বিয়ের সময়, তিনি তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা Jean Tatlock-এর সাথে সম্পর্কে ছিলেন, যিনি ১৯৪৪ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন।
জার্মানদের আগে পারমাণবিক বোমা তৈরি করার জন্য রাষ্ট্রপতি Franklin D. Roosevelt-এর একটি জরুরি আহ্বানে গবেষণাগারটি ম্যানহাটন প্রকল্পের অধীনে পড়ে।
১৯৪২ সালে Oppenheimer ম্যানহাটন প্রকল্পের গোপন গবেষণাগারের সাইট হিসাবে নিউ মেক্সিকোর Los Alamos Ranch School-কে নির্বাচন করেছিলেন।
এটি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেছে। এছাড়াও, নিউ মেক্সিকো Oppenheimer-এর কাছে একটি বিশেষ জায়গা ছিল, কারণ তিনি তাঁর কৈশোরকাল থেকে অনেকবার সেখানে গিয়েছিলেন।
১৯৪৫ সালের ১৬ই জুলাই Oppenheimer এবং অন্যান্যরা লস আলামসের দক্ষিণে ট্রিনিটি টেস্ট সাইটে বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বিস্ফোরণ করার জন্য জড়ো হন। গোপনে পরিচালিত পরীক্ষাটি কার্যকরী হয়েছিল।
১৯৪৫ সালের ৬ই ও ৯ই আগস্ট জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে Oppenheimer-এর সহায়তায় তৈরি দুটি বোমা নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে অন্তত ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়।
হিরোশিমাতে বোমা হামলা করার রাতে Oppenheimer তাঁর সহবিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিলেন এবং তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে তাঁর একমাত্র আফসোস হল বোমা তৈরির কাজ জার্মানির বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য সময়মতো শেষ হয়নি।
যদিও বিজ্ঞানীরা তাঁদের সাফল্যে রোমাঞ্চিত ছিলেন, কিন্তু তবুও তাঁরা আক্রমণের কারণে ঘটা অসামরিক নাগরিকের প্রাণহানিতে আতঙ্কিত হয়েছিলেন এবং এই ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন যে এই হাতিয়ার হয়তো ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করবে।
ম্যানহাটন প্রকল্প এবং তিনি যে বোমাগুলি তৈরি করতে সহায়তা করেছিলেন তা রক্ষা করে Oppenheimer যুক্তি দিয়েছিলেন যে পারমাণবিক বিজ্ঞানের সম্ভাবনাগুলিকে পুরোপুরি বোঝার দরকার ছিল।
জাপানে বোমা হামলার দু-মাস পরে Oppenheimer, Truman-এর সাথে বৈঠকে বসেছিলেন এবং USSR-এর সাথে সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ সম্পর্কে উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। Truman পরে সেই বৈঠকের কথা স্মরণ করে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন যে পারমাণবিক বোমার জনক একজন "শিশুর ন্যায় ক্রন্দনকারী বিজ্ঞানী" ছিলেন।
৩০-এর দশকের শেষের দিকে Oppenheimer বামপন্থী কারণগুলি সমর্থন করার জন্য কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিয়েছিলেন, স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধে ফ্যাসিবাদ বিরোধী রিপাবলিকানদের অনুদান দিয়েছিলেন এবং বামপন্থী সংবাদপত্র People’s World-এ সাবস্ক্রাইব করেছিলেন। যাই হোক, তিনি কিন্তু তাঁর স্ত্রী এবং ভাইয়ের মতো মার্কিন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন না।
যুদ্ধের পরে, Oppenheimer-এর বিরোধকারীরা তাঁর বামপন্থীদের সাথে সংযোগকে ব্যবহার করে তাঁকে 'নিরাপত্তার প্রতি হুমকি' হিসাবে আখ্যায়িত করেছিল।
১৯৪৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন (AEC) গঠন করে। Oppenheimer পারমাণবিক অস্ত্রের উপর আরও নিয়ন্ত্রণলাভের জন্য এই কমিশনে তাঁর পদকে ব্যবহার করেছিলেন এবং তিনি হাইড্রোজেন বোমার বিকাশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন।
ব্যবসায়ী Lewis Strauss (ছবিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে), যিনি ১৯৫৩ সালে AEC-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, তিনি হাইড্রোজেন বোমার বিরুদ্ধে Oppenheimer-এর করা বিরোধিতাকে অপছন্দ করেছিলেন। Oppenheimer-এর আনুগত্য তদারকি করার জন্য একটি নিরাপত্তা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
FBI-এর সহায়তায়, অবৈধভাবে Oppenheimer-এর ফোন ট্যাপ করা হয়েছিল, AEC যুক্তি দিয়েছিল যে কমিউনিস্টদের সাথে Oppenheimer-এর সম্পর্ক তাঁকে নিরাপত্তার প্রতি হুমকিতে পরিণত করেছে। ১৯৫৪ সালে সরকার তাঁর নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করে।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার কমিটি ১৯৪৫, ১৯৫১ এবং ১৯৬৭ সালে Oppenheimer-কে মনোনীত করে। যাই হোক, এই পুরষ্কার তাঁকে না দিয়ে তার সমসাময়িক মানুষদের দেওয়া হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতি John F. Kennedy ১৯৬৩ সালে Oppenheimer-কে বৈজ্ঞানিক কৃতিত্ব এবং নেতৃত্বের জন্য এনরিকো ফার্মি পুরষ্কারে ভূষিত করেছিলেন কিন্তু তা সত্ত্বেও Oppenheimer কখনওই আর নিজের নিরাপত্তা ছাড়পত্র ফিরে পাননি।
যাই হোক, Oppenheimer তাঁর বাকি জীবন ধরে পদার্থবিজ্ঞান এবং পারমাণবিক প্রযুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করতে এবং লিখতে থাকেন।
অবিরাম ধূমপানকারী Oppenheimer ১৯৬৫ সালে গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। অসম্পূর্ণ অস্ত্রোপচারের পরে তিনি বিফল বিকিরণ-চিকিৎসা এবং কেমোথেরাপি নিয়েছিলেন। এরপর তিনি কোমায় চলে যান এবং কয়েক দিন পরে ১৯৬৭ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি নিউ জার্সির প্রিন্সটনের বাড়িতে মারা যান। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি Oppenheimer-এর নিরাপত্তা ছাড়পত্র পুনরুদ্ধার করেনি কিন্তু এর পরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে যে তাঁর শুনানি অন্যায্য ছিল।
সূত্র: (History) (National Geographic) (Live Science)
আরও দেখুন: যেসকল উদ্ভাবকদের মৃত্যু তাদের নিজেদের উদ্ভাবন দ্বারা ঘটেছে
চলচ্চিত্রের পেছনের মানুষটি: J. Robert Oppenheimer কে ছিলেন?
"পারমাণবিক বোমার জনক" সম্পর্কে জানুন
LIFESTYLE বিজ্ঞান
Christopher Nolan-এর 'Oppenheimer' চলচ্চিত্রের মুক্তির সাথে সাথে এতে কোনও সন্দেহ নেই যে "পারমাণবিক বোমার জনক" সম্পর্কে জানার জন্য মানুষের মনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। J. Robert Oppenheimer দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য পরিচিত ছিলেন। এই তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন ম্যানহাটন প্রকল্পের গোপন লস অ্যালামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির পরিচালক, যা পারমাণবিক বোমা তৈরি করেছিল যা জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে আনুমানিক ১০০,০০০ থেকে ২০০,০০০ লোককে হত্যা করেছিল।
Oppenheimer সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী? তাহলে এই কুখ্যাত পদার্থবিদ সম্পর্কে আপনি যা জানেন না তা জানার জন্য ক্লিক করুন।