আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব আলাদা। আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিত্বেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং তার মধ্যে অনেকগুলিই আমরা যা কিছু করি এবং যেভাবে করি তার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায়। হ্যাঁ, যেভাবে আমরা আমাদের টয়লেট পেপার রোল করি অথবা যেভাবে হাঁটাচলা করি তা আমাদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছুই বলে দিতে পারে।
এই গ্যালারিতে, আমরা এমন কিছু জিনিস দেখব যা আমরা করে থাকি এবং যা সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যে- লক্ষণ প্রকাশ করে। এগুলি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিনা তা জানতে ক্লিক করুন।
হ্যাঁ, আপনি যেভাবে কোনো টয়লেট পেপার রোলকে ঝুলিয়ে রাখেন তা আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কিছু কথা বলে দেয়। থেরাপিস্ট Gilda Carle পরিচালিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, পেপার রোলকে আপনার ওভারহ্যান্ড বা আন্ডারহ্যান্ড পজিশনে রাখা আপনি কতটা দৃঢ়চেতা তা নির্দেশ করে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, যাঁরা ওভারহ্যান্ড পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন তাঁরা অনেক বেশি কর্তৃত্বপূর্ণ, আর অন্যদিকে যাঁরা আন্ডারহ্যান্ড পদ্ধতি বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা বেশি আনুগত্যশীল।
কেউ কেউ তাঁদের টয়লেট পেপার রোলকে ঝুলিয়ে রাখার দিকটিকে খুবই গুরুত্বসহকারে নিয়ে থাকেন বলে মনে করা হয়, কারণ যেখানেই থাকুক না কেন এর অবস্থান বদলে দেওয়ার কথা তাঁরা স্বীকার করে নিয়েছেন।
আপনি কী ধরনের জুতো পছন্দ করেন এমনকী সেটিও আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করার একটা ভালো উপায়। একটি গবেষণায়, কিছু স্বেচ্ছাসেবককে শুধুমাত্র জুতোর ছবি দেখে বেশ কয়েকজনকে মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছিল এবং চমকপ্রদভাবে তাঁদের প্রতিক্রিয়াগুলি একদম সঠিক ছিল (যাঁরা জুতো পরেছিলেন তাঁরা ব্যক্তিত্ব বিষয়ক একটি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছিলেন)।
যাঁরা ছবিগুলি দেখেছেন তাঁরা বয়স এবং আয় সংক্রান্ত বিষয়ের মতো বিষয়গুলিকে চিহ্নিত করেছিলেন।
তাহলে এর থেকে কী বোঝা যায়? যাঁরা বেশি আরামদায়ক জুতো পরেন তাঁরা বেশি অমায়িক হয়ে থাকেন, আর অন্যদিকে যাঁরা কম আরামদায়ক জুতো পরতে পছন্দ করেন তাঁরা বেশি শান্ত প্রকৃতির হন বলে মনে করা হয়।
যাঁরা একটু বেশি আক্রমণাত্মক বা আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন হন তাঁরা অ্যাঙ্কল বুট বা গোড়ালি-ঢাকা বুটজুতো পরতে পছন্দ করেন, এবং যাঁদের জুতো নতুন এবং ভালো অবস্থায় রয়েছে তাঁরা কিছুটা বেশি উদ্বিগ্ন বা তাঁদের ব্যক্তিত্ব একটু নাছোড়বান্দা প্রকৃতির বলে মনে হয়।
অতিশয় যুক্তিপরায়ণ এবং কর্মক্ষম মানুষেরা তাঁদের শরীরের ভর বা ওজনকে কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে দিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে হাঁটেন। যাঁরা কাঁধ পিছনে ঠেলে, বুক চিতিয়ে এবং মাথা উঁচু করে হাঁটেন তাঁদের সাধারণত উৎকৃষ্ট সামাজিক দক্ষতাসম্পন্ন, বেশি আকর্ষণীয় ও রসবোধসম্পন্ন বলে মনে করা হয়।
নিজের পায়ের উপর শরীরের পুরো ভর দিয়ে যাঁরা সোজাসুজিভাবে হাঁটেন (সামনে বা পিছনে ভর না দিয়ে), তাঁরা সাধারণত কাজের চেয়ে মানুষের উপর বেশি মনোনিবেশ করে থাকেন। অন্তর্মুখী মানুষেরা মাটির দিকে বা মেঝের দিকে তাকিয়ে হালকা চালে হেঁটে থাকেন।
আপনি যেভাবে অন্য ব্যক্তির সাথে হ্যান্ডশেক/ করমর্দন করেন তা আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু প্রকাশ করে এবং অতি অবশ্যই প্রথম পরিচয়ে আপনার সম্পর্কে কী ধারণা হচ্ছে এবং মানুষ আপনার সম্পর্কে কী ভাবছে তার উপর প্রভাব ফেলে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাঁরা দৃঢ়ভাবে হ্যান্ডশেক/ করমর্দন করেছিলেন তাঁরা সাধারণভাবে বেশি ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন, আত্মবিশ্বাসী, অভিব্যক্তিপূর্ণ এবং বহির্মুখী প্রকৃতির ছিলেন।
আর যাঁরা ঢিলেঢালাভাবে হ্যান্ডশেক/ করমর্দন করেন, তাঁরা সাধারণত দৃঢ়ভাবে হ্যান্ডশেক/ করমর্দন করা মানুষগুলির তুলনায় কম আত্মবিশ্বাসী, বেশি লাজুক, খ্যাপাটে স্বভাবের এবং সামাজিকভাবে বেশি উদ্বিগ্ন প্রকৃতির হয়ে থাকেন।
ইমেইল করার আদবকায়দা হল আরও একটি বিষয় যা আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারে। আপনি কি "আমি", "আমাকে" এবং "আমার" এই শব্দগুলি বেশি পরিমাণে ব্যবহার করে থাকেন? সাধারণত এটি তারই লক্ষণ যে আপনার মধ্যে কিছুটা নারসিসিস্টিক অর্থাৎ আত্মরতিমূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
আপনি কি সেই ধরনের মানুষ যিনি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নিখুঁতভাবে একটি ইমেইল লেখেন এবং সেটি ভালোভাবে লেখা হল কিনা এবং টাইপের কোনো ভুল থেকে গেল কিনা তা নিশ্চিত করতে বারবার সেটিকে পর্যালোচনা করেন? এটি হল একজন ব্যক্তির কর্তব্যনিষ্ঠা, পরিপূর্ণতাবাদ (পারফেকশানিজম্) এবং কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে থাকার লক্ষণ। হয়তো কিছুটা আশ্চর্যজনকভাবে বলা যায় যে, দীর্ঘ ইমেইল লেখার প্রতি যাদের ঝোঁক থাকে, তাদের পুঙ্খানুপুঙ্খতা ও শক্তির প্রতি ইঙ্গিত করলেও কিছুটা অভাবগ্রস্ততার প্রতিও যেন ইঙ্গিত করে থাকে।
আমাদের অনেকেরই শরীরকেন্দ্রিক পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ অর্থাৎ নার্ভাস টিক রয়েছে। একটি গবেষণা অনুসারে, একঘেয়েমি দূর করতে কিংবা বিরক্তি বা অসন্তুষ্টির মোকাবিলা করতে আপনার যদি নিজের চুল টানা বা নখ কামড়ানোর মতো প্রবণতা থাকে, তবে আপনার মধ্যে একজন পারফেকশনিস্ট হওয়ার বৈশিষ্ট্য থেকে থাকতে পারে।
সময়োপযোগীতা আপনার ব্যক্তিত্বকে কতটুকু সঠিকভাবে প্রকাশ করে? সময়ানুবর্তী লোকেরা সাধারণত বেশি বিবেকবান এবং অমায়িক হয়ে থাকেন।
যারা তাড়াতাড়ি কোথাও পৌঁছাতে চায় তারা স্নায়বিকতায় বেশি স্কোর করতে পারে। এবং সবশেষে, যারা সব সময় দেরি করে থাকে তারা সাধারণত ধীর প্রকৃতির মানুষ হয়ে থাকে।
আপনি কি আপনার সময় নিতে এবং ধীরে ধীরে খেতে পছন্দ করেন? এটি সাধারণত একটি লক্ষণ যে আপনি কীভাবে জীবন উপভোগ করতে হবে তা জানেন, তবে আপনি নিয়ন্ত্রণে থাকতে পছন্দ করেন।
অন্যদিকে আপনি যদি তাড়াতাড়ি খাবার খেতে পছন্দ করেন তাহলে আপনি কেবল একজন ধৈর্যহীন ব্যক্তিই নন বরং আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষাও বেশি।
যারা নতুন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেন (দুঃসাহসিক, ঝুঁকি গ্রহণকারী) এবং খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে খুঁতখুঁতে স্বভাবের (উদ্বিগ্ন, স্নায়বিক) হয়ে থাকে তাদের মধ্যেও পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায়। আপনি কি নিজের প্লেটের সমস্ত খাবার আলাদা করতে পছন্দ করেন? তাহলে এটি একটি সতর্কতার লক্ষণ, এবং আপনি সাধারণভাবে সবকিছুকে বিশদভাবে জানার চেষ্টা করেন।
আপনি কি কোনও পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে লেবেলের সমস্ত উপাদানগুলি সাবধানতার সাথে বিশ্লেষণ করেন? এর অর্থ আপনি বিবরণের প্রতি বেশি মনোনিবেশ করেন এবং জ্ঞানের পাল্লায় উচ্চ স্কোর করেন। অন্যান্য ভোক্তারা কোনও পণ্য সম্পর্কে সাধারণ তথ্য দিয়েও ঠিকভাবে কাজ চালাতে পারবে।
হ্যাঁ, আপনার সেলফি তোলার ধরনও আপনার সম্পর্কে কিছু না কিছু জানাতে পারে। সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির কর্তৃক পরিচালিত ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিচ থেকে সেলফি তোলার প্রতি বেশি ঝোঁক রেখেছিলেন তারা বেশি অমায়িক ছিলেন।
এই গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যারা বিবেকবোধে বেশি স্কোর করেন, তাদের ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্যক্তিগত জায়গা দেখানোর সম্ভাবনা কম থাকে।
আপনি যদি ইতিবাচক মুখের অভিব্যক্তি (যেমন হাসি) দিয়ে সেলফি তোলার প্রতি বেশি ঝোঁক রাখেন তবে আপনি সম্ভবত নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে বেশি ইচছুক। যারা হাঁসের মতো মুখ করে ছবি তুলে তাদের স্নায়বিক ব্যক্তিত্ব বেশি রয়েছে বলে মনে করা হয়।
হাতের লেখা বিশ্লেষণ, বা গ্রাফোলজি, নতুন কিছু নয়, তবে এটি বর্তমানেও একজনের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের একটি দুর্দান্ত উপায়। আপনি কি বড় অক্ষর ব্যবহার করেন? তাহলে আপনি সম্ভবত মানুষের প্রতি বেশি মনোনিবেশ করেন এবং মানুষের মনোযোগ পেতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে, যাদের হাতের লেখা ছোট তারা তীব্র একাগ্রতার সহিত ভাল কাজ করে এবং সামগ্রিকভাবে বেশি অন্তর্মুখী হয়ে থাকেন।
আপনার অক্ষরগুলো কি ডানদিকে বেশি ঝুঁকে থাকে? তাহলে আপনি সম্ভবত বেশি আবেগপ্রবণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ। বামদিকে ঝুঁকে থাকা সাধারণত একটি লক্ষণ যে আপনি বেশি স্বতন্ত্র এবং স্বল্পভাষী। এবং যাদের লেখায় কোন ঝোঁক নেই, তারা সাধারণত যৌক্তিক এবং বাস্তববাদী মানুষ হয়ে থাকেন।
লেখার সময় আপনি কতটা চাপ প্রয়োগ করেন? যারা ভারী চাপ প্রয়োগ করে তারা বেশি প্রতিক্রিয়াশীল হয় এবং যেকোনো বিষয়কে বেশি তীব্রভাবে অনুভব করে। অন্যদিকে, যারা হালকাভাবে লেখেন তারা সরলতা এবং কম সংবেদনশীল সম্পৃক্ততা প্রদর্শন করেন।
আপনি কি নিজের বাহুতে ব্যাগ বহন করেন? যারা এটি করেন তারা সাধারণত সামাজিক মর্যাদাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
ব্যাগ সামনে দিয়ে, শরীর জুড়ে ব্যাগের ফিতা ঝুলিয়ে দেওয়া হলে, এর অর্থ আপনি সাধারণত সুরক্ষা এবং গ্রহনযোগ্যতার উপর বেশি গুরুত্ব দেন। যারা ব্যাগকে পেছনে বহন করেন তারা সামগ্রিকভাবে বেশি শান্ত বলে মনে হয়।
আপনি যদি ব্যাকপ্যাক পছন্দকারী ব্যক্তি হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই আপনি নিজের স্বাধীনতার উপর বেশি জোর দেন। এবং যারা নিজের ব্যাগ হাতে বহন করে, তারা সুসংগঠিত এবং দৃঢ় হয়ে থাকে।
যেসব ছোট ছোট বিষয়গুলো আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু প্রকাশ করে দেয়
যার ভিতরে রয়েছে আপনার পছন্দের জুতো থেকে শুরু করে আপনার সেলফি তোলার ধরন পর্যন্ত
LIFESTYLE মনোবিজ্ঞান
আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব আলাদা। আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিত্বেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং তার মধ্যে অনেকগুলিই আমরা যা কিছু করি এবং যেভাবে করি তার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায়। হ্যাঁ, আমরা আমাদের টয়লেট পেপার যেভাবে রোল করি অথবা যেভাবে হাঁটাচলা করি তা আমাদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দিতে পারে।
এই গ্যালারিতে, আমরা এমন কিছু জিনিস দেখব যা আমরা করে থাকি এবং যা সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য-লক্ষণ প্রকাশ করে। এগুলি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিনা তা জানতে ক্লিক করুন।