যেভাবে আপনি নিজের জীবন ধ্বংস করছেন -

আমরা অনেকেই অনেক দেরি না হওয়া পর্যন্ত কিছু বিষয় উপলব্ধি না করেই জীবন অতিবাহিত করি। বেশ কয়েকটি  পছন্দের আচরণ এবং জীবনধারা রয়েছে যা আমাদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তবে অনেক সময় আমরা সেগুলি শনাক্ত করতে ব্যর্থ হই। কিন্তু ফলাফলগুলি প্রায়শই আমাদের  জীবনে সামগ্রিক সন্তুষ্টিকে প্রভাবিত করার জন্য যথেষ্ট গুরুতর হয় এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে তা সম্পূর্ণ ধ্বংসের কারণও হতে পারে।

জানতে আগ্রহী? ক্লিক করুন এবং দেখুন আপনি এমন কোনও কাজ করছেন কিনা যা আপনার জীবনকে ধ্বংস করতে পারে।

© Shutterstock

আপনি অন্যদের উপর অত্যধিক বিশ্বাস স্থাপন করেন -

এরকম নয় যে আপনার কাউকে বিশ্বাস করা উচিত নয় - সেটি করাও বেশ খারাপ হবে। তবে মনে করবেন না যে সবাই আপনার জন্য এবং আপনার সর্বোত্তম স্বার্থের দিকে নজর দেবে। মানুষ সর্বপ্রথমে নিজের দিকে মনোনিবেশ করে থাকে।

© Shutterstock

আপনি নিজের অনুমানশক্তিকে বিশ্বাস করেন না -

আপনি যখন কোনও পরিস্থিতি সম্পর্কে অস্বস্তি বোধ করেন, তখন সম্ভবত আপনার অনুমানশক্তি আপনাকে কী বোঝানোর চেষ্টা করছে তা বিবেচনা করার মতো বিষয়।

© Shutterstock

আপনি নিজের ক্রিয়াকলাপের পরিণতি কী হবে তা বিবেচনা করেন না -

প্রতিটি কাজেরই একটা পরিণতি আছে। এটি ভালো হতে পারে বা খারাপও হতে পারে, তবে এটি উপেক্ষা করা আক্ষরিক অর্থে আপনার জীবনকে ধ্বংস করতে পারে। আপনি জেলে যেতে পারেন, অথবা মারাও যেতে পারেন।

© Shutterstock

আপনি নিজের মঙ্গলকে বিপদে ফেলে অন্যকে খুশি করার চেষ্টা করেন -

অন্যদের সাথে ভালো আচরণ করার মধ্যে কোনও ভুল নেই, তবে আপনি সবাইকে খুশি করতে পারবেন না, বিশেষত সবসময় নয়। আর সেটাতে কোনও সমস্যা নেই। নিজের মঙ্গলকে উপেক্ষা করে আপনি যদি অন্যকে খুশি করার জন্য নিজের সীমা অতিক্রম করেন, তাহলে অনুমান করুন এর কারণে কার জীবন ধ্বংস হচ্ছে?

© Shutterstock

আপনি নিজের সীমাবদ্ধতাগুলি মেনে নিতে অস্বীকার করেন -

দেখুন, চমৎকার কিছু করার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। কিন্তু আমরা সবকিছু করতে পারি না, আর সবকিছু ভালোভাবেও করতে পারি না। আপনি যদি এমন একটি স্বপ্ন অনুসরণ করতে থাকেন যা অর্জন করা অসম্ভব, তবে আপনি এই গ্রহে মূল্যবান সময় নষ্ট করছেন। বাস্তববাদী হওয়া এবং নিজের সীমাবদ্ধতাগুলি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

© Shutterstock

আপনি কিছু জিজ্ঞাসা না করেই অনুমান করে নেন -

হ্যাঁ, আমরা সবাই এটি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় করে থাকি, তবে এর মানে এই নয় যে এটি একটি ভালো বিষয়। সঠিক তথ্য জানার পরিবর্তে অনুমানের ভিত্তিতে কাজ করা আপনাকে সমস্যায় ফেলতে পারে। আমরা যদি প্রশ্ন না করি তবে বিশ্ব একটি বিশাল অপব্যাখ্যা হতে পারে।

© Shutterstock

আপনি উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে প্রতিক্রিয়া দেখান -

হঠাৎ করে প্রতিক্রিয়া দেখানো অনেক ক্ষতি করতে পারে। ধৈর্য ধরুন এবং সমস্ত তথ্য শুনুন এবং এটির প্রক্রিয়া করার জন্য নিজেকে সময় দিন। তারপরে এমন কিছু যা আপনার দিকে লক্ষ্যস্থির করে তার প্রতি সহজাতভাবে প্রতিক্রিয়া জানানোর পরিবর্তে ধীরেসুস্থে প্রতিক্রিয়া জানান।

© Shutterstock

আপনি রেড ফ্ল্যাগগুলো উপেক্ষা করেন -

এটি অন্যান্য সবকিছুর মধ্যে রোমান্টিক সম্পর্ক থেকে শুরু করে বন্ধুত্ব পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জিনিসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে। পরে চিন্তা করলে ২০/২০, তাই না? সুতরাং এক মুহূর্তের জন্য থামুন এবং কিছু বিপদসঙ্কেতকে শনাক্ত এবং কিছু দৃষ্টিভঙ্গিকে অর্জন করার চেষ্টা করুন।

© Shutterstock

আপনি অতীতে বাস করতে থাকেন -

অতীত আমাদের একটি অংশ, কিন্তু এটা আসলে অতীতের অংশ। এটি চলে গেছে, এবং আমরা এমন কিছুই করতে পারি না যা আমাদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেবে। এটা মেনে নিন এবং অতীতে বাস করা বন্ধ করুন।

© Shutterstock

আপনি আপনার স্বাস্থ্যকে অবহেলা করেন -

যতক্ষণ পর্যন্ত না কিছু খারাপ হয়…ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা অনেকেই আমাদের স্বাস্থ্যকে অবহেলা করি। এটি আপনার জীবন ধ্বংস করার একটি নিশ্চিত উপায়। নিজের যত্ন নেওয়া জরুরি। "খারাপ" কিছু ঘটার জন্য অপেক্ষা করবেন না। তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে।

© Shutterstock

আপনি কখনওই আপনার আরামের স্থান ছেড়ে যান না -

আমরা বুঝি - নিজের আরামের স্থানে অবস্থান করা নিরাপদ। কিন্তু আরাম অগ্রগতি বা সুখের সমতুল্য নয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সজ্ঞান প্রচেষ্টা করুন, অন্যথায় আপনি "কী হতো" করতে করতে জীবনের জন্য আফসোস করতে পারেন।

© Shutterstock

আপনি আকস্মিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন -

লাস ভেগাসে এমন একজন যার সাথে আপনি আগের রাতে দেখা করেছিলেন, তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া স্বাভাবিক এবং রোমান্টিক মনে হতে পারে, তবে এটি অবশ্যই সবচেয়ে বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত নয় ...

© Shutterstock

আপনি আকস্মিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন -

বিয়ে করার মতো বড় সিদ্ধান্তগুলি মনোযোগ সহকারে বিবেচনা করা উচিত। আবেগ এবং ঝোঁকের উপর ভিত্তি করে এসব করার পরিবর্তে আপনার এই জিনিসগুলি যৌক্তিকভাবে এবং বিচারবুদ্ধির সাথে চিন্তা করা উচিত।

© Shutterstock

আপনি শুধুমাত্র নিজের মতো মানুষের সাথে মেলামেশা করেন -

অবশ্যই, যারা আমাদের মতো চিন্তা করে এবং আমাদের গ্রাহ্য করে তাদের দ্বারা ঘিরে থাকতে খুবই ভালো লাগে, তবে এর বিপরীত চিন্তাধারার মানুষের সাথে মেলামেশা করাও স্বাস্থ্যকর। মানুষের ভিন্ন মতামত আছে এবং এতে কোনো সমস্যা নেই। তাদের দ্বারা অপমানিত হওয়ার পরিবর্তে, এটি স্বীকার করুন যে তাদের অস্তিত্ব রয়েছে।

© Shutterstock

আপনি নিজেকে সবসময় ভুক্তভোগী হিসেবে দেখাতে চান -

আপনার দুর্ভাগ্যের জন্য অন্যের উপর দোষারোপ করা আপনাকে আরও ভালো বোধ করাবে না। সত্যিই, অন্যের অভিযোগ শুনতে কেউই পছন্দ করে না। ভালো মানুষের সাথে খারাপ জিনিস ঘটে; কখনও কখনও খুবই খারাপ কিছু ঘটে। কিন্তু নিজের দুর্দশা দূর না করে শুধুমাত্র বাহ্যিক উৎসকে দোষারোপ করবেন না।

© Shutterstock

আপনি এমন কেউ হওয়ার ভান করেন যা আপনি নন -

অন্য কেউ আপনাকে আপন করে নেবে তার জন্য আপনি যদি এমন কেউ হওয়ার ভান করেন যা আপনি নন, তবে আপনি মিথ্যায় ভরা জীবনযাপন করছেন। এবং মিথ্যাভরা জীবনযাপন করা আপনার জীবন ধ্বংস করার একটি নিশ্চিত উপায়।

© Shutterstock

আপনি অন্যের কাছে সাহায্য চান, কিন্তু কখনওই অন্যকে সাহায্য করেন না -

আপনার জীবনে যদি এমন লোক থাকে যারা আপনার প্রয়োজনের সময় আপনাকে সহায়তা করবে, এমন ভাগ্য যদি আপনার থাকে, তবে আপনার কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। শুধু তাই নয়, তারা যখন আপনার কাছে সাহায্য চাইবে তখন আপনারও অনুগ্রহ ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

© Shutterstock

আপনি আর্থিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন -

আপনার বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন, তাই আপনাকে যথাযথ আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে, অন্যথায় আপনি খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন। আপনি যদি দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে ব্যয় করতে থাকেন (উদাহরণস্বরূপ অত্যাবশ্যকীয় জিনিসের পরিবর্তে অপ্রয়োজনীয় জিনিসে), তবে আপনি আপনার জীবন ধ্বংস করতে পারেন।

© Shutterstock

আপনি ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে বিচার করেন -

কখনও কখনও আপনাকে কেবলমাত্র আপনার ভুল এবং অন্যায়কে স্বীকার করতে হবে এবং শুধু ক্ষমা চাইতে হবে। অনেক সময় কিছু খারাপ আচরণের কোনও যৌক্তিকতা থাকে না। শুধু ক্ষমা চাইলেই কাজ হয়ে যায়।

© Shutterstock

আপনি অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি গ্রহণ করেন -

আপনি ঝুঁকিমুক্ত জীবনযাপন করতে পারবেন না, তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনার অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেওয়া উচিত। আমরা এমন বিষয় সম্পর্কে বলছি যা আপনি খুব বেশি চিন্তা না করেই করে ফেলেন। যেমন কিছু পানীয় খাওয়ার পরে গাড়ি চালানো বা সৈকতে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে সানস্ক্রিন প্রয়োগ না করার মতো বিষয়গুলি।

© Shutterstock

আপনি ছোট বাচ্চার মতো আচরণ করতে থাকেন -

কেউ কি আপনাকে কখনও বড়দের মতো আচরণ করতে বলেছে? হয়তো আপনার অল্পবয়স্কদের আচরণই ছিল এই মন্তব্যের কারণ। প্রাপ্তবয়স্কদের জগতে বাচ্চার মতো আচরণ করা আপনার কোনও উপকারে আসবে না।

© Shutterstock

আপনি বাজে কথা বলতে থাকেন -

কথায় আছে, "আপনার যদি বলার মতো সুন্দর কিছু না থাকে তবে একবারে কিছুই বলবেন না।" বাজে কথা বলা এবং পরচর্চা করার চেয়ে নীরব থাকাই শ্রেয়। নিজের মুখ বন্ধ না রাখতে পারার কারণে এমন ব্যক্তি হবেন না যাকে কেউ সহ্য বা বিশ্বাস করতে পারে না।

© Shutterstock

আপনি নিজের কথা অতিরিক্ত শেয়ার করার ঝোঁক রাখেন -

আপনি নিজের সম্পর্কে অনেক বেশি তথ্য প্রকাশ করেন। অন্তরঙ্গ সম্পর্ক থাকা ভালো যেখানে আপনি আপনার জীবন সম্পর্কে খোলাখুলিভাবে কথা বলতে পারেন, তবে আপনার সহকর্মী বা মদখানায় কোনও অপরিচিত ব্যক্তির সাথে এটি করা উপযুক্ত নাও হতে পারে। আপনি ভালোভাবে চেনেন না এমন লোকেরাও আপনার বিরুদ্ধে এই তথ্যগুলো ব্যবহার করতে পারে।

© Shutterstock

আপনি নিজে যা সঠিক বলে মনে করেন তা অনুসরণ করার পরিবর্তে মানুষের ভিড়কে অনুসরণ করেন -

পশুপালের আচরণ মানুষের মধ্যে থাকা স্বাভাবিক, তবে এক মুহূর্তের জন্য বিরতি নিন এবং অন্য সবাই যা করছেন তার পরিবর্তে যা সঠিক তা করার চেষ্টা করুন - এমনকী যদি তা কাউকে রাগত করে তোলে তা সত্ত্বেও। আপনি যদি অন্ধভাবে ভিড়কে অনুসরণ করেন তবে আপনি আপনার ক্রিয়াকলাপের জন্য পরবর্তীতে আফসোস করতে পারেন এবং আপনি কখনওই চাইবেন না একটি আফসোসে পূর্ণ জীবন অতিবাহিত করতে।

© Shutterstock

আপনি ছোট ছোট সমস্যাকে উপেক্ষা করতে থাকেন... -

... যতক্ষণ পর্যন্ত না সেগুলো বড় সমস্যায় পরিণত হয়। যদি কিছু করার প্রয়োজন হয়, তাহলে তা করে ফেলুন। এটি অত্যধিক কঠিন না হওয়া পর্যন্ত এটিকে উপেক্ষা করতে থাকবেন না। এটি আপনার জীবনে অপ্রয়োজনীয় চাপ যোগ করবে।

© Shutterstock

আপনি নিজেকে অসংবেদনশীল করার চেষ্টা করতে থাকেন -

অত্যধিক অনুভব করা ভীতিজনক হয়ে উঠতে পারে, তাই আপনি মদ, বিনোদন ইত্যাদি দিয়ে নিজেকে অসাড় করে তোলেন। যদিওবা, কখনও কখনও, আপনাকে আপনার আবেগ এবং অনুভূতিগুলি অনুভব এবং প্রকাশ করতে হবে। এটা মানুষ হিসেবে জীবনের একটি অংশ।

© Shutterstock

আপনি নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করতে থাকেন -

অবশ্যই, আমরা সবাই এটি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় করে থাকি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রমাগত অন্যদের অনুসরণ করা এবং তাদের জীবনকে নিজের সাথে তুলনা করা আপনার কোনও উপকারে আসবে না।

© Shutterstock

আপনি নিজেকে নিজে জানার জন্য সময় নেন না -

নিজেকে নিজে জানার জন্য বিরতি দেওয়া এবং সময় নেওয়া সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে অনেকেই আসলে আমরা কে তা না জেনেই জীবন পার করে দিই।

© Shutterstock

আপনি সব বিষয়ে তাড়াহুড়ো করেন -

সম্পর্ক থেকে শুরু করে ব্যয়বহুল কেনাকাটা পর্যন্ত, আপনি নিজের ধারণাগুলোকে দীর্ঘ সময় ধরে সিদ্ধ বা পরিপক্ব হতে দেন না। এটি আপনার জীবনে ভয়ংকর প্রভাব ফেলতে পারে এবং প্রকৃতপক্ষে এটি জীবনকে ধ্বংস করতে পারে। 

Sources: (A Conscious Rethink) (Thought Catalog) (YourTango)

© Shutterstock